জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ অভিযোগ করেছেন যে নির্বাচন ইঞ্জিনিয়ারিং করা হচ্ছে। তিনি বলছেন, একজন উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ষড়যন্ত্রে জড়িত রয়েছেন।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে দলের ঢাকা জেলা ও দুই মহানগর শাখার সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি ভাষণে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
ভবিষ্যতে নির্বাচন কারচুপির চেষ্টা চলছে বলে সতর্ক করে হাসনাত বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন স্বৈরাচারী ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। দুটি দলের মধ্যেই প্রতিটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দখল হয়ে যাচ্ছে। সচিবালয়ে বসে কিছু রাজনৈতিক দল জেলা প্রশাসক (ডিসি) গুলো ভাগাভাগি করছে। এতে অন্তর্বর্তী সরকার সহায়তা করছে। যদি এমনটা চলতে থাকে, জনগণ তা মেনে নেবেন না।’
নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নানা ধরনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘এখন সচিবালয়ে ঢুকে ডিসি ভাগাভাগি চলছে—চট্টগ্রামের ডিসি আমায় লাগবে, উত্তরবঙ্গের দুটো ডিসি আমাকে ছাড়তে হবে; রংপুরের ডিসি ছাড়লে আমাকে অন্য কোথাও ডিসি ছেড়ে দিতে হবে।’ তিনি কোনো দলকে নাম না জানিয়েই দাবি করেন, ‘একটি দল তাদের নিয়ন্ত্রিত ব্যাংক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান দখল করে সেখানে কর্মচারীদের পোলিং এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিতে চাচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি ওই দল স্কুল কমিটি ও সংশ্লিষ্ট পদগুলো দখল করে শিক্ষকদের ওপর অতিরিক্ত প্রভাব প্রয়োগ করছে। আগামী নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করার জন্য এখনই তাদের সশস্ত্রভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’
নির্বাচন কমিশনকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করে হাসনাত বলেন, ‘এই কমিশন মেরুদণ্ডহীন; রাজনৈতিক দলগুলো এটিকে নিজেদের চাহিদা অনুযায়ি ভাগ করে নিয়েছে। দলগুলো উপদেষ্টাদের সম্পর্কে দাবি করে বলছে কেউ থাকবে, কেউ থাকবে না—এভাবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে জানাতে চাই—আপনি যদি দর্শকের ভূমিকাই পালন করেন… আপনাদের এখানে এনেছি যাতে ন্যায্যতা নিশ্চিত হয়; কিন্তু আপনি কিছু দলকে নিয়ে ডিসি ভাগাভাগিতে সহায়তা করলে চলবে না। একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে আমরা সহায়তা করতে প্রস্তুত, তবে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অংশ ভাগাভাগি বন্ধ হতে হবে।’
এনসিপি নেতার আরও অভিযোগ, সেনানিবাসেও একজন ব্যক্তি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছেন। নাম না করে তিনি বলেন, ‘ক্যান্টনমেন্টে বসে ওই ব্যক্তি ষড়যন্ত্র করছেন—কাকে জেতাবেন, কাকে হারাবেন সেটাই ঠিক করছেন। আমরা বলি, দেশের জন্য সৎ সেনাবাহিনীর কলঙ্কমুক্ত করার সুযোগ এসেছে; যদি আবার ক্যান্টনমেন্টে বসে দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়, আমরা তা মেনে নেব না। আমাদের ওপর ট্যাংক চালালেও আমরা রাস্তায় থেকে সরে যাব না।’





