ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিমান হামলায় গুঁড়িয়ে যাওয়া পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আগের চেয়ে আরও শক্তিশালীভাবে পুনর্নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে ইরান। রবিবার রাজধানী তেহরানে ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার দপ্তর পরিদর্শনকালে প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, “কেবল ভবন ধ্বংস করলেই আমাদের অগ্রগতি থেমে যাবে না। আমাদের বিজ্ঞানীরা এখনো সেই জ্ঞান ও দক্ষতা ধরে রেখেছেন। আমরা ধ্বংস হওয়া স্থাপনাগুলো আরও উন্নত প্রযুক্তিতে আবার গড়ে তুলব।” পেজেশকিয়ানের এই বক্তব্য তাঁর দপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
যদিও প্রেসিডেন্ট বিস্তারিত পরিকল্পনা জানাননি, ফেব্রুয়ারিতেও তিনি একই ধরনের বার্তা দিয়েছিলেন—ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আক্রান্ত হলে দেশটি তা দ্রুত পুনর্গঠন করবে।
গত জুনে ইসরাইল ১২ দিন ধরে ইরানের ওপর ব্যাপক বিমান হামলা চালায়; পরে যুক্তরাষ্ট্রও সেই অভিযানে অংশ নেয়। হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক ঘাঁটি ও আবাসিক এলাকা। এতে বহু শীর্ষ পারমাণবিক বিশেষজ্ঞ নিহত হন। জবাবে ইরান ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে পাল্টা আঘাত হানে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি “সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে”; তবে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র এখনো জানা যায়নি।
এদিকে, ওমান যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানকে পুনরায় আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে। বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আইআইএসএস মানামা ডায়ালগ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আলবুসাইদি বলেন, “আমরা চাই, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র আবার আলোচনায় ফিরে আসুক।”
রোববার ইরানের সরকারি মুখপাত্র ফাতেমে মোহাজারানি জানান, তেহরান কূটনৈতিক সংলাপ পুনরায় শুরু করার বিষয়ে কিছু বার্তা পেয়েছে, যদিও বিস্তারিত তথ্য তিনি প্রকাশ করেননি।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ওমান ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পাঁচ দফা গোপন বৈঠকের আয়োজন করেছিল। ষষ্ঠ বৈঠকের মাত্র তিন দিন আগে ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর বিমান হামলা চালায়।
এরপর থেকে ইরান নতুন করে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে। যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্স ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে ‘স্ন্যাপব্যাক’ ব্যবস্থা চালু করায় পুরনো নিষেধাজ্ঞাগুলো আবার কার্যকর হয়েছে।
তবে তেহরান জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক চাপ বা নিষেধাজ্ঞা কোনোভাবেই তাদের কর্মসূচি থামাতে পারবে না; বরং ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো আরও উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তিতে পুনর্নির্মাণ করা হবে।








