রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ১৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দীতে অনুষ্ঠিতব্য খতমে নবুওয়াত মহাসম্মেলন সফল করতে আজ (৯ নভেম্বর) রুববার সকাল ৭টায় সম্মিলিত খতমে নবুওয়াত পরিষদ, ঢাকা-৪ নং জোনের আয়োজনে জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়ায় এক বিশাল খতমে নবুওয়াত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত ঢাকা-৪ নং জোনের সভাপতি ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর। আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়ার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা ইসমাইল বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মধুপুর পীর বলেন, যুগের মহান বুজুর্গ হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ.-এর এই কেন্দ্র থেকেই সমস্ত বিদ্বেষী ও বাতিল মতবাদ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে। তিনি কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে অস্থায়ী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে তীব্রভাবে অনুরোধ জানান এবং বলেন, এই দাবি আদায়ের জন্য সকল সৎ ওলামা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণে তারা বাধ্য হবেন।
মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী সভাপতির বক্তব্যে বলেন, খতমে নবুওয়াতের আক্বিদা সরাসরি ঈমানসংক্রান্ত; এটিকে অস্বীকার করা কুফুর। গোলাম আহমদ কাদিয়ানিকে নবী মানায় কাদিয়ানীরা নিঃসন্দেহে কাফের, এবং তাই তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা অনিবার্য। তিনি বলেন, কাদিয়ানীরা মুসলিম পরিচয়ে সাধারণ মুসলমানদের ঈমান ক্ষুণ্ন করছে এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মিশনের মাধ্যমে ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনায় তৎপরতা দেখাচ্ছে। এই সত্যটি দেশের প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিতে হবে বলে তিনি জোর দেন।
আগামী ১৫ নভেম্বরের মহাসম্মেলন সফল করতে ১১ নভেম্বর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে সম্মিলিত খতমে নবুওয়াত পরিষদের উদ্যোগে একটি বৃহৎ গণমিছিল বের করার ঘোষণা দেন মধুপুর পীর। তিনি সবাইকে দল-মত নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করে জান-মাল নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের আহ্বান জানান এবং বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে; প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগও তাদের গ্রহণযোগ্য।
সম্মেলনে মুফতি ইলিয়াস মাদারীপুরী সঞ্চালনায় অংশগ্রহণ করেন খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটির সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা রশিদ আহমদ, ইন্টারন্যাশনাল খতমে নবুওয়াত মুভমেন্টের সভাপতি মাওলানা শোয়ায়েব ইব্রাহিম, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আবুল কাশেম আশরাফী, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদেক হক্কানী সহ অন্যান্য বহু বিশিষ্ট আলেম ও নেতারা বক্তব্য রাখেন।
অন্যান্য বক্তৃতাকালে আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আশিক উল্লাহ, অর্থ সম্পাদক মাওলানা ইউনুস ঢালী, মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, মুফতি শামসুদ্দিন বড়াইলি, মাওলানা বশিরুল হাসান খাদিমানী, মাওলানা শিব্বির আহমদ, মুফতি মাহবুবুর রহমান বিন নূরী, মাওলানা রাশেদ বিন নূর, মুফতি হাবিবুর রহমান, মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান শরীয়তপুরী ও মুফতি আবুল হাসান কাসেমী প্রভৃতি আরও বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনে বলা হয়, কাদিয়ানী মতাবলম্বীদের কাফের সত্তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো এবং জনগণের মাঝে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়াই তাদের মূল লক্ষ্য। আগামী ১১ ও ১৫ নভেম্বর ঘোষিত কর্মসূচিগুলো সফল করার জন্য সকল ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।






