ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের আমীরুল মু’মিনীন ও সর্বোচ্চ নেতা শাইখুল হাদীস মাওলানা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা শিক্ষকদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন পাঠচক্র বা দরসে ‘ইমামতে কুবরা’ (বৃহৎ নেতৃত্ব বা খিলাফত) সম্পর্কিত বিষয়গুলোর ওপর বিশেষ জোর দেন। তিনি বলেন, মুসলমানদের উচিত শরিয়তনির্ভর নেতৃত্বের গুরুত্ব ও ইসলামী মূল্যবোধ সম্পর্কে গভীরভাবে সচেতন হওয়া।
কান্দাহারে উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত মাদরাসা, বিচার বিভাগ ও ইফতা শাখার শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
আফগান নেতা বলেন, “শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মুসলমানদের মধ্যে শরিয়তভিত্তিক নেতৃত্ব অনুপস্থিত ছিল। আজ আল্লাহ তাআলা ইসলামী ব্যবস্থা কায়েম করেছেন, তাই এর মাহাত্ম্য ও দায়িত্ব সম্পর্কে সবাইকে জানাতে হবে।”
আলেম ও শিক্ষাবিদদের দায়িত্বের প্রসঙ্গে হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা বলেন, “ইমারাতে ইসলামিয়া প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য হলো নবীজির শরিয়তকে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা।” তিনি আশ্বাস দেন যে, সরকার ইসলামী শিক্ষা, ইফতা ও বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নে সর্বাত্মক সহায়তা দেবে।
ইফতা ও ক্বাযা বিভাগের আলেমদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, “ইসলামী ব্যবস্থার অন্যতম মূল লক্ষ্য হলো শরিয়তসম্মত আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। তাই তোমাদের উচিত ইফতা ও ক্বাযায় পূর্ণ দক্ষতা অর্জন করা, যেন মুসলমানদের সঠিকভাবে সেবা দেওয়া যায়। ক্বাযির দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—তোমরা সাহসিকতার সঙ্গে শরিয়তসম্মত রায় দেবে, কোনো প্রভাবের কাছে নতি স্বীকার করবে না, আমিও করি না।”
তিনি ফতোয়া প্রদানকারীদের সতর্ক করে বলেন, “ফতোয়ার ক্ষেত্রে নীতিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে, বহু আলেমের সঙ্গে পরামর্শ করে মতামত নিতে হবে। মূল উৎস হবে প্রাচীন আলেমদের গ্রন্থসমূহ, আর সমসাময়িক ফতোয়াগুলো গ্রহণ করা হবে সহায়ক হিসেবে।”
ইমারাতে ইসলামিয়াকে সহযোগিতা করার জন্য আলেম সমাজ ও সাধারণ জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা বলেন, “ইসলামী শাসনব্যবস্থা ও শরিয়তের প্রয়োগে আপনাদের সহযোগিতা আমাদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান।”
এই সমাবেশে প্রায় বারো শতাধিক আলেম ও শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আফগানিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ক্বাযিউল কুযাত শাইখুল হাদীস মাওলানা আবদুল হাকিম হাক্কানি, কেন্দ্রীয় দারুল ইফতার প্রধান শাইখুল হাদীস মাওলানা খৈর জান, এবং উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী শাইখুল হাদীস মাওলানা নিদা মুহাম্মাদ নাদিম প্রমুখ।
সূত্র: আরটিএ (RTA)








