পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান মারা গেছেন—এমন ভুয়া খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে স্পষ্টভাবে নাকচ করেছেন পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফের (পিটিআই) সিনেটর খুররম জিশান।
তিনি জানান, ইমরান খান জীবিত আছেন এবং এখনও রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারেই বন্দি রয়েছেন। তাকে একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা হয়েছে, যেন তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা যায়।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই)–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন জিশান।
তার ভাষ্য, বর্তমান রাজনৈতিক নেতৃত্ব ইমরান খানের জনপ্রিয়তা নিয়ে আতঙ্কিত। এই কারণেই তার কোনো ছবি বা ভিডিও প্রকাশে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, “এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। প্রায় এক মাস ধরে ইমরান খানকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা হয়েছে। তার পরিবারের সদস্যরাও এক মাস ধরে দেখা করতে পারেননি। এমনকি তার আইনজীবী এবং দলীয় শীর্ষ নেতাদেরও সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এটি মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘন। মনে হচ্ছে, তাকে কোনো বিষয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা নিশ্চিত হয়েছি তিনি জীবিত আছেন এবং বর্তমানে আদিয়ালা কারাগারেই অবস্থান করছেন। তিনি ভালো আছেন।”
পাকিস্তান সরকার ইমরান খানের সঙ্গে কী ধরনের সমঝোতায় যেতে চাইছে—এমন প্রশ্নের উত্তরে জিশান জানান, তাকে দেশ ছেড়ে নিরব জীবনযাপনের বিনিময়ে কিছু ছাড়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
“ইমরান খানকে বলা হচ্ছে পাকিস্তান থেকে চলে যেতে। বিদেশে গিয়ে শান্তিতে বসবাস করলে তাকে কিছু সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি জন্মগতভাবে যে ধরনের নেতা, তাতে তিনি এমন চুক্তিতে সম্মতি দেবেন না,” বলেন জিশান।
তিনি দাবি করেন, কারাবন্দি থাকা সত্ত্বেও ইমরান খানের জনসমর্থন বেড়েই চলেছে। দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পিটিআই–এর শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে উঠেছে এবং ইমরান খানের আদর্শ দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলছে।
তার বক্তব্য, “পিটিআই–এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। এমন কঠিন পরিস্থিতি প্রকৃত বিশ্বাসীদের সামনে এগিয়ে আসতে প্রেরণা দেয়।”
কারাগারে যাওয়ার পর থেকে ইমরান খানের কোনো ছবি প্রকাশ না করার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, সরকার আশঙ্কা করছে—একটি মাত্র ছবি প্রকাশ পেলেও তা ব্যাপক গণসমর্থন জাগাতে পারে।
উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহে আফগানিস্তানভিত্তিক কয়েকটি সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্টে দাবি করা হয়, আদিয়ালা কারাগারেই ইমরান খান নিহত হয়েছেন। সেই সময়ই জানা যায়, আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও এক মাস ধরে তার বোনদের সাক্ষাৎ করতে না দেওয়ায় পাকিস্তানজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি








