ভারতের কেরালায় স্কুলে হিজাব পরা নিয়ে বিতর্কের জেরে শেষ পর্যন্ত আপসের পথে হাঁটলেন এক মুসলিম ছাত্রীর পরিবার। কোচির পাল্লুরুথি এলাকার বেসরকারি সেন্ট রিটা’স পাবলিক স্কুলে এই ঘটনাটি ঘটে। শুরুতে হিজাব ছাড়তে অনড় থাকলেও শেষ পর্যন্ত স্কুলের পোশাকবিধি মেনে মেয়েকে ক্লাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন তার বাবা-মা।
ঘটনার সূত্রপাত, ওই ছাত্রীর হিজাব পরা নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানালে। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রতিষ্ঠানটি দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করে। মেয়েটির বাবা-মা জানিয়েছেন, “সে বুধবার থেকে ক্লাস শুরু করবে। আমরা স্কুলের নিয়ম মেনে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হিজাব তাদের নির্ধারিত ইউনিফর্ম নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তবে তারা আশ্বস্ত করেছে যে, নিয়ম মানা কোনো শিক্ষার্থীকে ক্লাসে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখা হবে না। পিটিএ সভাপতি জোশি কাইথাভালাপ্পিল বলেন, “ছাত্রীটি চাইলে ক্লাসে অংশ নিতে পারে। স্কুল কাউকেই শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে না, শুধু নিয়ম মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।”
এর আগে এরনাকুলামের শিক্ষা উপ-পরিচালক সুবিন পল মন্তব্য করেন, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিজাব পরাকে অজুহাত দেখিয়ে ছাত্রীর শিক্ষা অধিকার অস্বীকার করতে পারে না। কেরালার সাধারণ শিক্ষা মন্ত্রী ভি. শিবনকুট্টিও বলেন, “সেন্ট রিটা’স পাবলিক স্কুল হিজাব পরা এক ছাত্রীর মৌলিক অধিকার, বিশেষত ধর্মীয় স্বাধীনতা ও শিক্ষার অধিকার লঙ্ঘন করেছে।”
তিনি আরও জানান, “স্কুল ইউনিফর্মের নকশা ও রঙ নির্ধারণ করতে পারে, কিন্তু শিক্ষার্থীদের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করার অধিকার তাদের নেই। সরকার স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে এবং তাদের জবাবের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ঘটনার পর উত্তেজনা এড়াতে স্কুলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এমপি হিবি ইডেনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতা আনতে ভূমিকা রাখেন। এই মীমাংসায় সন্তোষ প্রকাশ করে মন্ত্রী শিবনকুট্টি বলেন, “এ ধরনের বিরোধ নিরসনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যস্থতা প্রশংসনীয়। তবে সরকার এতে কোনো পক্ষ নয়।”
সূত্র: অবজারভার পোস্ট








