সর্বশেষ
মহানবী (সা.) অবমাননা করে রাজীব সাহা এখনো অধরা
জুলাই সনদকে ইতিবাচক বললেও নির্বাচনী পরিকল্পনায় অসন্তোষ জামায়াতসহ সমমনা ৮ দলের
শিবচরে ট্রাকে অগ্নিসংযোগ, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের মামলায় রাজসাক্ষী হাজির ট্রাইব্যুনালে
শাপলা চত্বরে গণহত্যা তদন্তে দুই মাস সময় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল
নামসর্বস্ব সংগঠনের ব্যানারে ফের সক্রিয় ইসকন
শরিয়াহ আইন কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত হামলা চলবে: টিটিপি
পরিবেশবান্ধব নির্বাচন নিশ্চিত করতে পোস্টার নিষিদ্ধ করল কমিশন
ভারত থেকে আমদানির খবর ছড়াতেই পেঁয়াজের দামে পতন
আসামে ৫৮০ মুসলিম পরিবারের বাড়িঘর ভেঙে দিল রাজ্য সরকার
ইলেকট্রিক ব্যাট দিয়ে মশা-মাছি মারার হুকুম কী?
জামায় কবুতরের বিষ্ঠা থাকলে কি নামায সহীহ হবে?
চৌদ্দগ্রামে ট্রাক-সিএনজি-অটোর ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ৫
নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজপথ কর্মসূচি প্রতিরোধে কঠোর হুঁশিয়ারি প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিবের
কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে আলেমদের ঐক্যবদ্ধ আহ্বান

ইসলামের দৃষ্টিতে চাকরি ও পেশা নিয়ে স্পষ্ট নীতিমালা

আমার কলম অনলাইন

ইসলাম কোনো পদে নিয়োগ বা চাকরি গ্রহণের ক্ষেত্রে স্পষ্ট নীতিমালা প্রদান করেছে। তাই একজন মুসলমানের উচিত এসব নীতিমালা ভালোভাবে জানা, যেন জীবনের প্রতিটি কাজ ইসলামী নির্দেশনার আলোকে সম্পন্ন হয়।

নিচে কিছু পেশা ও তার ইসলামী দৃষ্টিকোণ তুলে ধরা হলো—

যে প্রতিষ্ঠান অবৈধ কার্যক্রমে যুক্ত, সেখানে চাকরি করা বৈধ নয়; সেখান থেকে অর্জিত বেতনও হারাম। যেমন—সিনেমা হল, বায়োস্কোপ, পূর্ণ সুদভিত্তিক ব্যাংক ও বীমা কোম্পানি। তবে ইসলামী ফকিহদের মতে, যদি কারও জন্য হালাল উপায়ে জীবিকা নির্বাহের আর কোনো পথ না থাকে, তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত এসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করা ও প্রাপ্ত আয় গ্রহণ করা আপাতভাবে অনুমোদিত হবে। (আহসানুল ফাতাওয়া, খণ্ড–৭; ফাতাওয়া রহিমিয়া, খণ্ড–২)

প্রভিডেন্ট ফান্ডের মূল অর্থ ও বাড়তি অংশ গ্রহণ করা বৈধ। তবে যে অংশ চাকরিজীবী স্বেচ্ছায় জমা দেন, তার ওপর প্রাপ্ত অতিরিক্ত অর্থ না নেওয়াই তাকওয়া।

চাকরির প্রয়োজনে সম্পূর্ণভাবে বিবস্ত্র হয়ে মেডিক্যাল পরীক্ষা দেওয়া শরিয়তসম্মত নয়। (ফাতাওয়া মাহমুদিয়া, খণ্ড–২)

চাকরি টিকিয়ে রাখা বা কোনো সুযোগ লাভের জন্য স্থায়ী বন্ধ্যাকরণ (ভ্যাসেকটমি/লাইগেশন) করা সম্পূর্ণ হারাম।

যদি প্রতিষ্ঠানের নিয়মে চাকরি ছাড়ার আগে নির্দিষ্ট সময় আগে জানাতে বলা হয়, তাহলে তা না মানা পাপ। তবে প্রতিষ্ঠান এর জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ আদায় করতে পারবে না কিংবা কর্মীর কাছ থেকে ওই সময়ের বেতন ফেরত নিতে পারবে না।

প্রতিষ্ঠান যদি শর্ত দেয় যে নির্দিষ্ট সময় পূর্ণ না করে চাকরি ছাড়তে পারবে না, তাহলে যৌক্তিক কারণ ছাড়া আগেই চাকরি ত্যাগ করা গুনাহের কাজ; তবে কাজের সময়ের বেতন-ভাতা সে পাবে। অযোগ্যতার কারণে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বরখাস্ত হলে অবশিষ্ট সময়ের বেতন পাওয়ার অধিকার থাকবে না। নির্ধারিত ছুটির বাইরে অতিরিক্ত ছুটি নিলে ঐ সময়ের বেতন পাওয়া যাবে না। প্রতিষ্ঠান ছুটির দিন নির্দিষ্ট না করলে প্রচলিত রেওয়াজ অনুসারে সিদ্ধান্ত হবে। আগের বছরের ছুটি অব্যবহৃত থাকলে পরের বছরে তা দাবি করা যাবে না। ছুটি ভোগ না করে কাজ করলেও সেই সময়ের জন্য অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দাবি করা যাবে না।অফিস সময়ের মধ্যে ব্যক্তিগত কাজ করা, এমনকি একটি ব্যক্তিগত চিঠি লেখা পর্যন্তও অনুচিত। তবে কাজ না থাকলে ব্যতিক্রম হতে পারে। শিক্ষকরা যেসব সময় ক্লাস নেই, সেই সময় ব্যক্তিগত কাজ করতে পারেন বা অন্যকে সহযোগিতা করতে পারেন।

আরো পড়ুন

সৌদি থেকে দেশে ফিরলো হজ্ব এজেন্সির প্রায় ৩৮ কোটি টাকা

বিদেশে চাকরি বা বসবাস সম্পর্কিত বিধান

নিজের দেশে স্বাভাবিক জীবিকা নির্বাহ সম্ভব হলে কেবল বিলাসী জীবনযাপনের উদ্দেশ্যে অমুসলিম দেশে যাওয়া মাকরুহ। সমাজে মর্যাদা অর্জন, বড়ত্ব দেখানো বা বিজাতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে অমুসলিম দেশে বসবাস করা হারাম।

যদি নিজের দেশে জীবিকা নির্বাহের উপায় না থাকে এবং বৈধ চাকরি অমুসলিম দেশে পাওয়া যায়, তাহলে দুই শর্তে সেখানে যাওয়া ও থাকা বৈধ।ঈমান ও আমল রক্ষায় নিশ্চয়তা থাকতে হবে। অন্যায়, অশ্লীলতা ও কুফরি সংস্কৃতি থেকে নিজেকে দূরে রাখা সম্ভব হতে হবে।অপরাধ ছাড়াই যদি দেশে অন্যায়ভাবে শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়, সেক্ষেত্রেও উপরোক্ত শর্তে অমুসলিম দেশে থাকা বৈধ।দাওয়াত ও তাবলিগের উদ্দেশ্যে অমুসলিম দেশে বসবাস করা শুধু বৈধই নয়, বরং উত্তম।

কিছু আধুনিক পেশার ইসলামী বিধান

ওকালতির পেশা বৈধ, তবে কেবল ন্যায়ের পক্ষে থাকা কেস পরিচালনা করা যাবে। মিথ্যা মামলা নেওয়া ও এর বিনিময়ে অর্থ গ্রহণ করা হারাম। আইন সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা বৈধ। ঔষুধ প্রদান ছাড়াও রোগীকে চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া বা প্রেসক্রিপশন লিখে অর্থ নেওয়া বৈধ। ঘড়ি ও চশমা মেরামতের কাজ বৈধ।বিদ্যুৎকর্মীর পেশা বৈধ, তবে কোনো হারাম প্রতিষ্ঠান বা অবৈধ কাজে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া নিষিদ্ধ।

সাংবাদিকতা বৈধ, তবে সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমকে নিম্নলিখিত নীতিগুলো মেনে চলতে হবে—

প্রমাণ ছাড়া এমন খবর প্রকাশ করা যাবে না, যা কারো মানহানি বা ক্ষতির কারণ হতে পারে। শুধুমাত্র গুজব, লোকমুখে শোনা কথা বা অন্য কোনো মাধ্যমের প্রকাশিত খবরের ওপর নির্ভর করা যাবে না। সাংবাদিকদের ইসলামি জ্ঞান থাকা উচিত, অথবা ওলামায়ে কেরাম থেকে পরামর্শ নেওয়ার অভ্যাস থাকা প্রয়োজন।

 

মাওলানা মুহাম্মাদ হেমায়াত উদ্দিন

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ