মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গুমের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় হেফাজতে থাকা ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন—র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও অবসরকালীন ছুটিতে থাকা কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান।
এছাড়া রয়েছেন র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম এবং ডিজিএফআইয়ের সাবেক তিন পরিচালক—মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
গুমের অভিযোগে করা দুটি মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ আগামী ২০ নভেম্বর নির্ধারণ করেছে ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে রামপুরায় ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত গণহত্যার মামলার শুনানির জন্য ৫ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে সকাল সোয়া ৭টার দিকে কড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত প্রিজনভ্যানে করে সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনাল চত্বরে আনা হয়। সাড়ে ৭টার দিকে তাদের প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে হাজতখানায় নিয়ে যায় পুলিশ সদস্যরা।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে সংঘটিত গুম-খুনসহ জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি আলাদা মামলায় হেফাজতে থাকা এই সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
তিনটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ৩৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে এক মামলায় ১৭ জন, আরেকটিতে ১৩ জন এবং অপরটিতে ৪ জনের নাম রয়েছে। দু’টি মামলায় সরাসরি আসামি হিসেবে আছেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৫ জনকে আজ আদালতে হাজির করা হয়।