সর্বশেষ
মহানবী (সা.) অবমাননা করে রাজীব সাহা এখনো অধরা
জুলাই সনদকে ইতিবাচক বললেও নির্বাচনী পরিকল্পনায় অসন্তোষ জামায়াতসহ সমমনা ৮ দলের
শিবচরে ট্রাকে অগ্নিসংযোগ, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের মামলায় রাজসাক্ষী হাজির ট্রাইব্যুনালে
শাপলা চত্বরে গণহত্যা তদন্তে দুই মাস সময় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল
নামসর্বস্ব সংগঠনের ব্যানারে ফের সক্রিয় ইসকন
শরিয়াহ আইন কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত হামলা চলবে: টিটিপি
পরিবেশবান্ধব নির্বাচন নিশ্চিত করতে পোস্টার নিষিদ্ধ করল কমিশন
ভারত থেকে আমদানির খবর ছড়াতেই পেঁয়াজের দামে পতন
আসামে ৫৮০ মুসলিম পরিবারের বাড়িঘর ভেঙে দিল রাজ্য সরকার
ইলেকট্রিক ব্যাট দিয়ে মশা-মাছি মারার হুকুম কী?
জামায় কবুতরের বিষ্ঠা থাকলে কি নামায সহীহ হবে?
চৌদ্দগ্রামে ট্রাক-সিএনজি-অটোর ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ৫
নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজপথ কর্মসূচি প্রতিরোধে কঠোর হুঁশিয়ারি প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিবের
কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে আলেমদের ঐক্যবদ্ধ আহ্বান

পুলিশের পোশাকে ডিবি হারুন ছিলো একজন মাফিয়া

আমার কলম অনলাইন

গণমাধ্যমে উঠা অভিযোগ অনুযায়ী নারী কেলেঙ্কারি, অন্যের সম্পদ দখল এবং চাঁদাবাজি ছিল এসপি হারুন অর রশীদের প্রধান কাজের মধ্যে। পুলিশের ইউনিফর্ম পরিধান করেও তিনি মাফিয়া আচরণ করতেন—বহুল অভিযোগে বলা হচ্ছে ডিসি অফিসকে তিনি একরকম ‘হেরেম’ বানিয়ে ফেলেন।

শোবিজের একাধিক নারীশিল্পীকে ডিবি অফিসে নেওয়া হত এবং সেখানে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলত বলে অভিযোগ রয়েছে। ধর্ষণ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী তৎপরতায় যুক্ত ব্যক্তিদের হারুনের নিকটবর্তী হিসেবে আনা হত। অবৈধ অর্থ উপার্জন করে সে টাকা অপব্যয় করতেন—বিশেষত শোবিজ সংক্রান্ত কাজে। অভিযোগে নাম রয়েছে গান বাংলার তাপস ও কনটেন্ট নির্মাতা তৌহিদ আফ্রিদের, যাদের বিরুদ্ধে বলা হয় তারা সুন্দরী নারীদের হারুনের কাছে এনে দিতেন। রাতের অন্ধকারে ডিবি অফিসকে এক ধরনের মঞ্চে রূপান্তর করা হতো—বেআইনি কার্যক্রম চলতো বলেও বলা হয়।

হারুনের বিরুদ্ধে আরও বলা হচ্ছে, মদ ও নারীর প্রতি আনুগত্যে তিনি বিপথগামী ছিলেন, ফলে তাপস ও আফ্রিদির মতো তার ঘনিষ্ঠরা নির্লজ্জভাবে কাজ চালাতে পারতেন। অভিযোগ অনুযায়ী তাপস গান বাংলা টেলিভিশন দখলে সফল হন হারুনের সহায়তায়। তৌহিদ আফ্রিদি হারুনকে ‘আংকল’ বলে ডাকতেন—আর হারুনের সুরক্ষায় তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো বিচার থেকে বঞ্চিত থাকত। এক কিশোরী (‘মুনিয়া’ নামে উল্লেখ)কে প্রেমের নাটকে ফুঁসিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়—এ ঘটনার দমন-অপচেষ্টায় হারুনের ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ। পরে ৫ আগস্ট তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেপ্তার হলে এই কাণ্ডের বাস্তব চিত্র বেরিয়ে আসে বলেও বলা হচ্ছে।

চাঁদাবাজি ও সম্পদ দখলের শতাধিক অভিযোগও হারুনের নামে জমে রয়েছে। ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের পালাও করে টাকা আদায়, জমি দখল ও সাজানো মামলায় ভীতি দেখিয়ে ধরা—এসবের ফলে তিনি একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিকেও কুক্ষিগত করেছেন বলে অভিযোগে উঠে আসে। চাঁদার দাবিতে একাধিক শিল্পপতিকে মামলা করে গ্রেপ্তার দেখানোর হুমকি দিতেন—এক ঘটনার বর্ণনায় বলা হয়েছে, আম্বার গ্রুপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেলের পরিবারের সদস্যদের ধরে নিয়ে প্রাক্তন এসপি হারুন একদল পুলিশ নিয়ে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে গিয়েছিলেন; পরে মুচলেকা নিয়ে ছাড়া হয়েছিল। এ ঘটনার পর ১০ নভেম্বর ২০১৯-এ তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে পুলিশ সদর দফতরে (ট্রেনিং রিজার্ভ) সংযুক্ত করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ যোগের আগে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত থাকার সময়ও তার বিরুদ্ধে বিপুল অভিযোগ উঠেছিল। ভুক্তভোগীদের দাবি—ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের জিম্মি করে অর্থ নেওয়া, জমি দখলের সহায়তা দেওয়া এবং নানা ধরনের অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ তার বিরুদ্ধেই অভিযোগ হিসেবে রয়েছে। একভাবে দাবি করা হয়, ২০১৮ সালে গাজীপুরের মাওনার নয়নপুর বাজারের ২১ শতাংশ জমি দখলে সহায়তা করে তিনি অন্তত বড় অঙ্কের টাকা নিয়েছেন—ভুক্তভোগীদের কথায় সেই জমি রাতের অন্ধকারে পুলিশের উপস্থিতিতে বুলডোজার চালিয়ে দখল নেওয়া হয়েছিল।

অন্য এক মামলায় বলা হয়েছে, চার বছর আগে প্রায় ১০০ কোটি টাকার একটি জমি জোর করে রেজিস্ট্রি করতে সহায়তা করেছেন হারুন; এ বিষয়ে জেলা যুগ্ম জজ আদালতে মামলাও দায়ের হয়েছিল। ২০১৬ সালের ১০ মে ভূমি মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা মামলা করলে পরে হারুন জামিনে মুক্তি নিয়েছেন বলেও জানা গেছে।

হারুনের আরও একটি শিকার ছিলেন শ্রীপুরের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. মাহতাব উদ্দিন। অভিযোগ–২০১৭ সালের একটি রাতে ডিবি সদস্যরা তাকে জিম্মি করে মিথ্যা মাদক মামলায় আটকের ব্যবস্থা করেন; পরে ২৪ দিন জেলে কাটাতে হয়েছে। মামলাটি ভুক্তভোগি বলেন সম্পূর্ণ সাজানো ও মিথ্যা।

ব্যবসায়ী মাহবুব হোসেনও অভিযোগ করেছেন যে তাকে তুলে নিয়ে জিম্মি করে নগদ ও জমি দাবি করা হয়—তিনি দাবী করেন, যাতে করে মোট ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ও চার শতাংশ জমি দাবি করে তাদের কাছে নেওয়া হয়। ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন এসব কাণ্ড এসপি হারুনের নির্দেশে তার ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে ঘটেছিল। এসব অভিযোগ থাকার পরও হারুন দীর্ঘ সময় চাকরিতে থাকা—কাজেই সমালোচনা উঠেছে যে তিনি রাজনৈতিক-পার্টি সম্পর্কের ছত্রছায়ায় বিচার বহির্ভূত ছিলেন।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ