ইসকনসহ যেকোনো সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা ও আর্থিক অংশগ্রহণ যদি অপরাধ বা সহায়তায় প্রমাণিত হয়, তাহলে তা তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে ইন্তিফাদা বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সংগঠনটি ৬ দফা দাবি তুলে ধরে।
সংগঠনের সদস্য আহমেদ রফিক বলেন, “আজ মুসলিম নারীর ওপর ধর্ষণকে গর্বের বিষয় হিসেবে প্রকাশ করা হয়, খতিব ইসকনের বিরুদ্ধে কথা বললে অপহৃত হয়ে শিকলে বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকতে হয়— অথচ রাষ্ট্র ও প্রশাসন নিশ্চুপ দর্শকের মতো তাকিয়ে থাকে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “রাষ্ট্র অপরাধীদের বাঁচানোর আয়োজন করছে, প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। সুশীল সমাজ নীরব, রাজনীতিবিদরা নিজের ভাবমূর্তি নিয়ে ব্যস্ত। পশ্চিমারা কী বলবে, আমেরিকা কী ভাববে, দূতাবাস কী নির্দেশ দেবে— এগুলো নিয়েই তাদের চিন্তা, কিন্তু আল্লাহর কাছে কী জবাব দেবেন তা নিয়ে ভাবার সময় নেই।”
আহমেদ রফিক আরও বলেন, “যখন কোরআন ও রাসুল (সা.)-এর অবমাননা হয়, মুসলিম নারীদের ইজ্জত লুণ্ঠিত হয়, তখন যারা ইসলামী রাজনীতির কথা বলেন, তাদের দেখা যায় না। পরে দায়সারা কিছু কথা বলে তারা নিজেদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করেন। মুসলিম সমাজে সম্প্রীতির কথা বলার নাম করে এরা অপরাধ ঢাকতে চায়।”
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “মুসলিম নারীর ইজ্জত রক্ষায় নীরব থাকা মানে অপরাধে অংশ নেওয়া। এই নীরবতা রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় গেঁথে থাকা ইসলামবিদ্বেষেরই প্রতিফলন।”
সমাবেশ থেকে সংগঠনটি যে অন্য পাঁচটি দাবি উত্থাপন করে, তা হলো—
১. গাজীপুর ধর্ষণ ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ বিভাগকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভুক্তভোগীকে দোষারোপ বন্ধ করে পুলিশি আচরণের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
২. টঙ্গী এলাকায় অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত চালিয়ে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৩. রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে “কাঠামোগত ইসলামবিদ্বেষ” প্রতিরোধে একটি জাতীয় নীতি ও কার্যকর কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
৪. মুসলিম নারীর নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষায় সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও আইনি কাঠামো গঠন করতে হবে।
৫. ইসলামবিদ্বেষ-বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ইমাম, নাগরিক ও সংগঠনগুলোর নিরাপত্তা রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
আহমেদ রফিক আরও বলেন, “হযরত শাহজালাল (রহ.), শাহপরাণ (রহ.), শাহমাকদুম (রহ.)-এর স্মৃতিবিজড়িত এই মুসলিম বাংলার মাটি থেকে আমরা ঘোষণা করছি— অন্যায়, অবিচার ও ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে আমরা আর নীরব থাকব না।”সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিক্ষোভকারীরা একটি মিছিল নিয়ে শাপলা চত্বরের দিকে অগ্রসর হন।





