ইসরাইলি অবরোধের ফলে গাজ্জার ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার এবং পুনর্গঠনের কাজ প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে — হাজার হাজার মানুষ ধ্বংসাবশেষে চাপা থাকা সঙ্গে রয়েছে বিস্ফোরিত না হওয়া প্রচুর বোমা। এছাড়া মানবিক সহায়তা ও ভারি যন্ত্রপাতি না পৌঁছানোয় বেঁচে থাকা ফিলিস্তিনিদের জীবনকেও বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজ্জা সিটির মেয়র ইয়াহিয়া আল-সররাজ জানান, ইসরাইলের সম্পূর্ণ অবরোধের কারণে ধ্বংসস্তূপ সরানো ও অবকাঠামো মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় ভারী যন্ত্রপাতি নগরীতে ঢুকতে পারছে না। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, শহরে হাজার হাজার টন অপিস্ফোরিত বোমা মানুষের প্রাণহানির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আল-সররাজ জানিয়েছেন যে পানি সরবরাহ রক্ষা ও নতুন কূপ খননের জন্য গাজ্জা সিটিতে কমপক্ষে ২৫০টি ভারী ইউনিট যন্ত্রপাতি ও প্রায় এক হাজার টন সিমেন্ট জরুরি। কিন্তু আল-জাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খুদারি জানান, এত বড় চাহিদার তুলনায় মাত্র ছয়টি ট্রাকই সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকতে পেরেছে। তিনি আরও বলেন যে প্রাপ্ত যন্ত্রপাতি মূলত ইসরাইলি নিহত বন্দিদের মরদেহ উদ্ধারে ব্যবহার করা হচ্ছে, যখন ফিলিস্তিনিদের উদ্ধার কাজ পিছিয়ে পড়েছে।
খুদারি উল্লেখ করেন, প্রায় ৯ হাজার ফিলিস্তিনি এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা থাকতে পারে এবং নতুন যন্ত্রপাতি না থাকায় তাদের উদ্ধার কার্যক্রম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিরা ধারণা করে যে যতক্ষণ পর্যন্ত ইসরাইলি বন্দিদের মরদেহ ফিরিয়ে না দেওয়া হবে, ততক্ষণ যুদ্ধবিরতিতে কোনো প্রগতি ঘটবে না।
হ্যালো ট্রাস্টের মধ্যপ্রাচ্য বিভাগের পরিচালক নিকোলাস টরবেট বলেন, গাজ্জা শহরের প্রায় প্রতিটি অংশেই বোমা পড়েছে এবং অনেক গোলাবারুদ আছে যা বিস্ফোরিত হওয়ার কথা ছিল কিন্তু তা হয়নি—এর ফলে অপসারণে বড় সময় লাগে। তিনি বলছেন, সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হলো ক্ষুদ্র বিস্ফোরক ব্যবহার করে ওই বোমাগুলো নিয়ন্ত্রিতভাবে বিস্ফোরণ করা, এবং এতে বড় ধরনের জটিল সরঞ্জামের প্রয়োজন নাও হতে পারে; ছোট যানবাহন বা হাতে বহনযোগ্য সরঞ্জামেই কাজ করা সম্ভব।
ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানিয়েছেন, ইসরাইল গাজ্জায় মোটামুটি ২ লাখ টন গোলাবারুদ নিক্ষেপ করেছে এবং এর মধ্যে প্রায় ৭০ হাজার টন এখনো বিস্ফোরিত হয়নি — যা এলাকার মানুষের জন্য গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।








