জুলাই জাতীয় সনদ ঘোষণায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আট দল। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একইসঙ্গে আয়োজনের সিদ্ধান্তকে তারা প্রত্যাখ্যান করে অবিলম্বে তা স্থগিতের দাবি তুলেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে জরুরি বৈঠক শেষে রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে দলের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের এসব কথা বলেন। তিনি জানান, জুলাই সনদ প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং এ উদ্যোগ আরও আগে নেওয়া প্রয়োজন ছিল। তবে গণভোট ও নির্বাচন একসঙ্গে করার ঘোষণা বিভ্রান্তি তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ডা. তাহের বলেন, কেন এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার জরুরি—তা সভায় বিশদভাবে আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় আল-ফালাহ মিলনায়তনে আট দলের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হবে। এ ছাড়া ঢাকার আগের কর্মসূচি পুনর্বহাল করা হবে। তবে শুক্রবার সারা দেশে পাঁচ দফা দাবিতে ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি চলমান থাকবে।
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচন ও দাবি-দাওয়ার অচলাবস্থা নিরসনের স্পষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়নি। জাতি যে স্বস্তি ও সমাধান প্রত্যাশা করছিল, ভাষণ বিশ্লেষণে তা পূরণ হয়েছে বলা যায় না।
জামায়াত নেতা জানান, প্রধান উপদেষ্টার তিনটি প্রতিশ্রুতির অন্যতম ছিল সংস্কার। কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী জুলাই সনদ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং বিএনপিসহ সব দল এতে সম্মত হয়। কিন্তু বিএনপির ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যে সংস্কার প্রক্রিয়া অস্পষ্ট হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি চালু রাখাসহ সংস্কার প্রস্তাবগুলো জনগণ কতটুকু গ্রহণ করবে তা নির্ধারণে আগে গণভোট প্রয়োজন। জনমত যদি প্রস্তাবগুলোকে সমর্থন না করে, তবে আগের পদ্ধতিতেই নির্বাচন হবে; আর জনগণ যদি গ্রহণ করে, তবে সেই অনুযায়ীই ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে গণভোট একসঙ্গে করার পক্ষে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া ‘অযৌক্তিক’ কারণের সমালোচনা করেন তিনি। তার অভিযোগ, ব্যয় সাশ্রয়ের যুক্তি দিয়ে গণভোট ও নির্বাচন একসঙ্গে করার যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, তা দুর্বল। তিনি বলেন, জাতীয় প্রয়োজন অনুযায়ী বাজেট বরাদ্দ হতেই পারে এবং এ খাতে ব্যয় করাও যৌক্তিক।
বৈঠক ও ব্রিফিংয়ে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, খেলাফত আন্দোলন, জাগপা, নেজামে ইসলাম পার্টি ও ডেভেলপমেন্ট পার্টির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।





